পরিবেশবান্ধব বা জিরো ওয়েস্টজ ভাবনা/ চিন্তা-চেতনা থেকে খাদি কাপড়ের ব্যবহার জনপ্রিয় করে তুলতে হবে।
গ্রিন ইকোনমি বা সবুজ অর্থনীতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে আমাদেরকেও সবুজ অর্থনীতি তথা সবুজ প্রবৃদ্ধি এবং সবুজ উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে হবে। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ সরকারও পরিবেশবান্ধব সবুজ অর্থনীতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। দেশের জলবায়ু সুরক্ষা ও জ্বালানী সাশ্রয়ী শিল্প বা উৎপাদন প্রযুক্তিকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাদি পোশাক ও বস্ত্র খাত সবুজ অর্থায়নের বা শিল্পের সেরা দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
কারন দেশীয় খাদি কাপড় তৈরি হয় সম্পুর্ন পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে, সেজন্য খাদিকে ‘ফিউচার ফ্যাব্রিক’ বলা হয়। খাদি কাপড়ে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয় তুলার তৈরি সুতো। যদিও বর্তমানে খাদি সুতোর সাথে বিভিন্ন সুতোর সংমিশ্রন করে বিভিন্ন কাউন্টের খাদি কাপড় বুনন হচ্ছে।
তবে এখনো শত বছরের দেশীয় ঐতিহ্য কুমিল্লার খাদি কাপড় তৈরির সম্পুর্ন প্রক্রিয়া পরিবেশবান্ধব। সুতা তৈরি থেকে শুরু করে বুননের পুরো প্রক্রিয়াটাই হাতে হয়ে থাকে। এতে বিদ্যুৎ খরচও হয় না। ফলে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব পোশাকের যে চাহিদা তৈরি হয়েছে, সেখানে একটা বিশাল জায়গা করে নিতে পারে আমাদের খাদি বস্ত্র।
এর পাশাপাশি গ্রিন ইকোনমির জিরো ওয়েস্টেজ বিবেচনাও খাদি কাপড়কে বিভিন্ন আঙ্গিকে ব্যবহার করা সম্ভব। কারন সুতার ভিন্নতার ফলে খাদি যেমন ৪০ কাউন্টের মোটা কাপড় হতে পারে একইভাবে তা ৮০ কাউন্টের মিহি ও মসৃণ কাপড়ও হতে পারে। তাই খাদি কাপড়কে যে কোন আঙ্গিকে ব্যবহার করার মাধ্যমে এর ওয়েস্টেজ জিরোতে নিয়ে আশা সম্ভব।
তবে এক্ষেত্রে দেশীয় খাদি উদ্দ্যোক্তাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে খাদি কাপড়কে ক্রেতাদের কাছে পরিচিত করে তুলতে হবে যাতে করে ক্রেতারা খাদি কাপড় ব্যবহারে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে।
