
দেশীয় খাদি কাপড় যেমন এ দেশের ঐতিহ্যের একটি অংশ একই সাথে এই দেশের ভিন্ন আবহাওয়ায় তৈরি বলে খাদি কাপড়ের রয়েছে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। শীত হোক কিংবা গরম, তাপ পরিবাহী খাদি কাপড় যেকোন ঋতুতেই ব্যবহার উপযোগী। যেমন এবছর শীত শুরুর আগে থেকেই অনলাইনে খাদি শালের ব্যাপক চাহিদা আমরা লক্ষ্য করেছি। তেমনি গ্রীষ্মের তাপদাহেও আরামদায়ক খাদি ছিলো ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায়।
তাই আগামীতে দেশের অগ্রসরমান পোশাক খাতে খাদি নিঃসন্দেহে দারুন সম্ভাবনাময় একটি ক্ষেত্র হতে চলেছে। এছাড়াও দেশের সবুজ শিল্পায়নেও খাদি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
বর্তমানে খাদি পোশাকের ব্যাপক জনপ্রিয়তার ফলে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো খাদি পোশাক তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে এবং কাজ করছে। দেশের বাজারে জনপ্রিয়তার এই ঊর্ধ্বগতি আন্তর্জাতিক বাজারেও খাদি’র একটি শক্ত অবস্থান তৈরিতে দারুনভাবে সহায়ক হবে বলে আমি আশাবাদী।
গত দুই বছরে দেশীয় পণ্যের অনলাইন প্রচারণার ফলে খাদি পোশাকের অভ্যন্তরীণ বাজার ইতিবাচকভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রতিনিয়ত পাচ্ছে এবং খাদি শিল্প তার গৌরবান্বিত অতীত ফিরে পেতে শুরু করেছে।
আমার মতো অনেক তরুণ উদ্দ্যোক্তাই বর্তমানে অনলাইনে খাদি কাপড় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন এবং খাদি’র অনলাইন প্রচার-প্রচারণায় তারাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। অনলাইন উদ্যোক্তারা খাদি’কে ক্রেতাসাধারণের আরো কাছে নিয়ে যেতে পেরেছেন এবং তাদেরকে খাদি পণ্যকে আরো বেশি কার্যকরভাবে আকৃষ্ট করেছেন। তার চেয়েও বড় কথা খাদির পোশাকে ক্রেতার রুচি ও চাহিদার প্রতিফলন ঘটানো অনেকটাই সম্ভবপর হয়েছে উদ্যোক্তা ও ক্রেতার মধ্যে এই সরাসরি যোগাযোগের কল্যাণে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে খাদির আগামী সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করলে খাদি শিল্পের আগ্রযাত্রায় এটি শুভসূচনা মাত্র। দেশে-বিদেশে খাদি’কে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এই খাতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার সঠিক ও কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। তাই দক্ষ কারীগরী প্রশিক্ষণ প্রদান, কাজের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, উন্নত ও স্বতন্ত্র ডিজাইন তৈরিতে গবেষণা ও প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, এবং উদ্দ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের মতো ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারী-বেসরকারি মহলের আন্তরিক সহযোগিতা এক্ষেত্রে একান্ত কাম্য।